অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মক্ষেত্রে অলিখিত যে নিয়ম থাকে

Australia Explained: HANDSHAKE MAN

The Australian workplace “is highly regulated”. Credit: Thomas Barwick/Getty Images

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

অস্ট্রেলিয়ায়, কর্মক্ষেত্রের আচরণবিধি কোম্পানি ভেদে ভিন্ন হয়, তবে কিছু সাধারণ অলিখিত নিয়ম সাধারণত বেশিরভাগ ব্যবসা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে অনুসরণ করা হয়। উপরন্তু, অস্ট্রেলিয়ার কর্মক্ষেত্রে কিছু অব্যক্ত নিয়ম রয়েছে যা সামাজিক নিয়মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
  • অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মক্ষেত্রে কিছু অলিখিত নিয়ম আছে যেগুলো গুরুত্ব না দিলে কারও কর্মজীবনের অগ্রগতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে৷
  • আপনি যদি এই অলিখিত নিয়মগুলো না বোঝেন তবে নিজেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করবেন, এমনকি কাজগুলো ভাল করে করতে পারবেন না।
  • কর্মক্ষেত্রের নিয়ম বোধগম্য না হলে আপনি জিজ্ঞাসা করে জেনে নিতে পারেন।
  • বিশেষজ্ঞরা বলেন কোম্পানিগুলোর উচিৎ নতুন কর্মীদের অলিখিত নিয়ম সম্পর্কে জানানো।
অস্ট্রেলিয়া এক্সপ্লেইনড বা অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে জানুন পর্বে, আমরা আলোচনা করব একটি নতুন কাজ শুরু করার সময় এই অলিখিত নিয়মগুলির সাথে কীভাবে নিজেকে পরিচিত করতে পারি তা নিয়ে।

অস্ট্রেলিয়ায় একটি নতুন চাকরি নিশ্চিত করার পরে, কোম্পানির অব্যক্ত নিয়মগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।

রবিন জনস, সহযোগী ডিন (একাডেমিক স্টাফিং) এবং ইউটিএস বিজনেস স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন।

তিনি বলেন,"আমাদের লিখিত আচরণবিধি রয়েছে যা প্রায়শই আমাদের আচরণের পদ্ধতিকে নিয়ন্ত্রণ করে, তবে কিছু অলিখিত নিয়মও আছে যা বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে এবং কারও কর্মজীবনের অগ্রগতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে৷"

প্রফেসর জনস হাইলাইট করেছেন এক্ষেত্রে কী কী সন্ধান করতে হবে।

তিনি বলেন,"আপনি আপনার ডেস্কে কীভাবে কাজ করেন সে সম্পর্কে কিছু সাধারণ কথা আপনি শুনতে পান। সুতরাং, আপনি আপনার ডেস্কে ব্যক্তিগত কথোপকথনে জড়িত কিনা, আপনি আপনার ডেস্কে ফোন কল করতে পারেন কিনা, ইত্যাদি বিষয়গুলি বুঝতে হতে পারে। কিংবা আপনার ডেস্কে যা খাচ্ছেন সে বিষয়ে সতর্ক হতে হবে, কারণ প্রায়শই খাবারের গন্ধ সম্পর্কে অনেক লোক অভিযোগ করে।"

ড্রেস কোড

ড্রেস কোড মেনে চলা কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

যদিও অনেক কর্মক্ষেত্রে ক্যাজুয়াল ড্রেস কোড থাকে, তবে অফিসের পোশাক কোম্পানি এবং নির্দিষ্ট কর্মক্ষেত্রের উপর নির্ভর করে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।

এই দৃশ্যমান নির্দেশিকাগুলির বাইরে, প্রফেসর জনস বলেছেন যে অফিসে লোকেরা কীভাবে অন্যদের সাথে সম্পর্ক করে সে সম্পর্কে অব্যক্ত নিয়ম রয়েছে।
Australia Explained: Office Dynamics
A diverse team of Australian professionals collaborating in a Sydney office. Credit: pixdeluxe/Getty Images

ইমেইল লেখার স্টাইল

প্রফেসর জনস আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অলিখিত নিয়ম যোগ করেন, সেটি হলো ইমেল যোগাযোগ শৈলী।

ক্রিস্টিন ক্যাসলেই মাল্টিকালচারাল অস্ট্রেলিয়ার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও), এটি একটি কুইন্সল্যান্ড ভিত্তিক সংস্থা যা স্টেটের অভিবাসীদের তাদের নতুন জীবন শুরু করতে সহায়তা করে।

তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় শ্রমিকদের অধিকার ও মঙ্গল রক্ষার লক্ষ্যে কর্মক্ষেত্রের আইন-কানুনের ব্যাপক ব্যবস্থা রয়েছে।
ইমেলের মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতার সাথে ভাষা ব্যবহার করুন, তা না হলে প্রাপক দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারেন।
রবিন জনস, সহযোগী ডিন (একাডেমিক স্টাফিং) এবং ইউটিএস বিজনেস স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক

বুলিং বা হয়রানি থেকে বিরত থাকা

নেজাত বাসার এসবিএস টার্কিশের নির্বাহী প্রযোজক। অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমানোর আগে তিনি ২০ বছর তুর্কিয়েতে কাজ করেছিলেন।

তিনি বলেন যে অস্ট্রেলিয়ার কর্মক্ষেত্র তুরকিয়ের তুলনায় অনেক বেশি আইন দ্বারা চালিত।

অস্ট্রেলিয়ায়, বুলিং বা হয়রানিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়, এবং এটি মোকাবেলা এবং প্রতিরোধ করার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে। আইনের উপর এই জোর কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের নানা বিষয়ে সম্পর্কিত।

মিঃ বাসার বলেন যেভাবে মতবিরোধ প্রকাশ করা হয় তা সাংস্কৃতিক নিয়মের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ান কর্মক্ষেত্রে তারা সাধারণত সম্মানজনক এবং গঠনমূলক পদ্ধতিতে তা করে থাকে।

অধিকন্তু, অস্ট্রেলিয়ানরা অফিসে সহকর্মীদের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে হ্যান্ডশেক, মাথা নাড়ানো বা মৌখিক শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকে।

মিজ ক্যাসলি বলেন, সহকর্মীদের মধ্যে প্রকাশ্যে অনুরাগ প্রদর্শন এড়ানো সাধারণত ভাল।
Australia Explained: OPEN PLAN WOMAN
Sometimes not understanding the unwritten rules in the workplace can lead to a person becoming isolated. Credit: pixdeluxe/Getty Images

পেশাদারিত্ব

অস্ট্রেলিয়ান কর্মক্ষেত্রেও সময়ানুবর্তিতা অত্যন্ত মূল্যবান। এটি অন্যের সময়ের প্রতি সম্মান এবং পেশাদারিত্ব হিসাবে দেখা হয়।

প্রফেসর জনস বলেন, অফিসে আপনি যে সময় পর্যন্ত থাকবেন তখন চারপাশের সংস্কৃতি বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ।

সামাজিকীকরণ এবং দলের মধ্যে বন্ধন

চা-কফি এবং স্ন্যাকসের জন্য যে ছোট বিরতি দেয়া হয় তা অস্ট্রেলিয়ান কর্মক্ষেত্রে সাধারণ এবং এটি সামাজিকীকরণ এবং দলের মধ্যে বন্ধনের সুযোগ হিসাবে দেখা হয়।

তবে কোন কোন ক্ষেত্রে অভিবাসীরা এই অভ্যাসের সাথে পরিচিত নাও হতে পারে এবং এটিকে অনৈতিক এবং সময় নষ্টকারী হিসাবে মনে করতে পারে।

একজন নতুন অভিবাসীর অভিজ্ঞতা থেকে মিজ ক্যাসলি বলেন তিনি তাকে নতুন চাকরিতে এ বিষয়ে সহায়তা করেছিলেন।

তিনি যোগ করেন যে কখনও কখনও কর্মক্ষেত্রে অলিখিত নিয়মগুলি না বোঝার ফলে একজন ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

এইভাবে, যদিও কোম্পানিগুলির জন্য কর্মক্ষেত্রে অলিখিত নিয়মগুলির প্রক্রিয়াটিকে সহজতর করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে কর্মীরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করে জানতে পারে এবং একজন পরামর্শদাতা বা একজন "বন্ধু" খোঁজার মাধ্যমে তাদের নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেয়া সহজ হতে পারে, মিজ ক্যাসলি সুপারিশ করেন।
কাউকে কফির জন্য আমন্ত্রণ করার মানে হলো 'চলুন ছোট্ট আড্ডা দেয়া যাক এবং একসাথে হওয়া যাক'। এটি সহকর্মীদের সাথে সংযোজের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, এবং এটি বোধগম্য যে আপনি কীভাবে এই সংযোগগুলি তৈরি করবেন।
ক্রিস্টিন ক্যাসলি, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, মাল্টিকালচারাল অস্ট্রেলিয়া
Australia Explained  : meeting speaking up woman
After securing a new job in Australia, it’s essential to understand the company’s unspoken rules. Credit: xavierarnau/Getty Images
অস্ট্রেলিয়ায় আপনার নতুন। জীবনে স্থায়ী হওয়ার বিষয়ে আরও মূল্যবান তথ্য এবং পরামর্শের জন্য 'অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে জানুন' পডকাস্ট সাবস্ক্রাইব করুন বা অনুসরণ করুন।

আপনার কোন প্রশ্ন বা কোন বিষয়ে ধারণা দিতে চাইলে -তে আমাদের একটি ইমেল পাঠান।

সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়তে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।

আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং 
পাওয়া যাচ্ছে। হ্যাঁ, আমরা আমাদের প্লাটফর্ম বিস্তৃত করছি। এসবিএস সাউথ এশিয়ান, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য।

এসবিএস বাংলা টিউন করুন এসবিএস অন ডিমান্ডে সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায়। দক্ষিণ এশীয় অন্যান্য ভাষায় সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো সরাসরি শুনতেও অন ডিমান্ডে টিউন করুন।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুনএসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে।

ভিজিট করুন আর, এসবিএস বাংলার এবং ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস।

Share