অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে আগামী বছর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আগমন সীমিত করবে সরকার

Australia Chinese Students

Students walking around the University of New South Wales campus in Sydney, Australia (AAP/Mark Baker, File) Credit: Mark Baker/AP

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আগমন সীমিত করা হবে আগামী বছরে। বিদেশীদের অভিবাসন সীমিত করতে যাচ্ছে সরকার। এডুকেশন মিনিস্টার জেসন ক্লেয়ার বলেন, এভাবে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষা-খাত আরও পক্ষপাতহীন করা হবে। তবে, এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে বহু বিশ্ববিদ্যালয়।


আগামী বছর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আগমন সীমিত করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন এডুকেশন মিনিস্টার জেসন ক্লেয়ার।

২০২৫ সালে সর্বমোট ২৭০,০০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে পারবে। সরকারী অর্থায়নকৃত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১৪৫,০০০ আসন থাকবে, যা ২০২৩ সালের অনুরূপ। আর, ভোকেশনাল এডুকেশন সেক্টরে পূর্বের চেয়ে ২০ শতাংশ আসন হ্রাস পাবে এবং আসন সংখ্যা হবে ৯৫,০০০।

বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত বেসরকারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য রাখা হয়েছে ৩০,০০০ আসন।
মিস্টার ক্লেয়ার বলেন, এই ক্যাপ বা সীমিতকরণের বিষয়টি আরোপ করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে।

সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এখন জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে কতজন শিক্ষার্থীকে তারা গ্রহণ করতে পারবে। তবে, এ সংক্রান্ত তথ্যাবলী এখনও জনসমক্ষে আসে নি।

গবেষণার প্রতি অধিকতর গুরুত্ব প্রদানকারী অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ‘গ্রুপ অব এইট’। তারা বলেছে, আগামী বছর তাদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসন সংখ্যা ৩০ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে তারা ধারণা করছে।

আর, তারা ইতোমধ্যে বহু শিক্ষার্থীকে প্লেসমেন্ট অফার বা আমন্ত্রণপত্রও পাঠিয়েছে।

গ্রুপ অব এইট এর সিইও ভিকি থম্পসন বলেন, এর প্রভাব পুরো খাতে অনুভূত হবে।

সরকার বলছে, এই ক্যাপের মাধ্যমে ভবিষ্যতে শিক্ষাখাত আরও টেকসই হবে। পাশাপাশি, বিদেশীদের অভিবাসনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে এটি।

বিগত অর্থবছরে তার আগের অর্থ-বছরের তুলনায় অস্ট্রেলিয়ায় আগমন বৃদ্ধি পেয়েছিল ৭৩ শতাংশ। আবাসন খাতে এর প্রভাব পড়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিরোধীদল এবং বিভিন্ন কমিউনিটির কেউ কেউ।

অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর স্টুডেন্ট ইকুইটি অ্যান্ড সাকসেস এর রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ডাইরেক্টর প্রফেসর ইয়ান লি বলেন, সে কারণেই এ রকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

তবে, তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা কোনো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারে, তার মানে এটা নয় যে, তারা সেখানে ভর্তি হবে।

আর, এই সিদ্ধান্তের কারণে বিদেশে অস্ট্রেলিয়ার সুনাম নষ্ট হতে পারে।

এডুকেশন মিনিস্টার জেসন ক্লেয়ার বলেন, সুনাম ইতোমধ্যে নষ্ট হয়েছে গত বছর একটি মিনিস্টারিয়াল ডাইরেকশন ইস্যু করার কারণে।

তৎকালীন হোম অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার ক্লেয়ার ও’নিল মিনিস্টারিয়াল ডাইরেকশন ১০৭ ইস্যু করেছিলেন। এর মাধ্যমে স্টুডেন্ট ভিসা অনুমোদনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদানের বিষয়টি দেখা হতো।

অর্থাৎ, উৎকৃষ্টতর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যারা ভর্তি হতো, কিংবা যারা একাধিক কোর্সে ভর্তি হতো, ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হতো।
এর মাধ্যমে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে, জেসন ক্লেয়ার বলেন, এর মাধ্যমে একটি অন্যায্য ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে কতিপয় বিশ্ববিদ্যালয়কে আনুকূল্য প্রদান করা হয়। আর, সরকার এটি বাতিল করার পরিকল্পনা করছে।

মিস্টার ক্লেয়ার যে রিজিওনাল ইউনিভার্সিটিগুলোর কথা বলেছেন, সেগুলোর একটি হলো ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইংল্যান্ড। এটি সিডনি ও গোল্ডকোস্টের মধ্যবর্তী স্থান আর্মিডেলে অবস্থিত। এই রিজিওনাল টাউনটিতে প্রায় ২৫,০০০ লোকের বসবাস।

আগামী বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৭০০ জন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ক্যাপ বা সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছরের ২০৫ জন শিক্ষার্থীর তুলনায় এই বরাদ্দ দ্বিগুণের চেয়েও বেশি।

ভাইস চ্যান্সেলর ক্রিস মোরান বলেন, তারা এই বরাদ্দ পেয়ে খুশী।

তবে, আগামী বছরের জন্য ভিসা কীভাবে যথা-সময়ে প্রক্রিয়াকরণ করা হবে তা নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে পরিবর্তন আসছে। অস্ট্রেলিয়া-ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওয়ার্কপ্লেস ট্রেইনিং এর ইভন ইয়ো বলেন, ট্রেইনিং কলেজগুলোও তাদের কর্মপন্থা নির্ধারণের উদ্যোগ নিচ্ছে।

উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি বৃহত্তর আইনী এজেন্ডার অংশ হলো এই স্টুডেন্ট ক্যাপস। এই ক্যাপগুলো বাস্তবায়নের জন্য আইন পাশ করতে হবে। এটি ইতোমধ্যেই হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ গিয়েছে এবং শীঘ্রই এটি সেনেটে পৌঁছুবে।

বিরোধীদল অভিবাসন হ্রাসের জন্য আহ্বান জানিয়েছে এবং আবাসনের ওপর থেকে চাপ কমানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। তবে, শিক্ষা বিষয়ক মুখপাত্রী সারাহ হেন্ডারসন বলেছেন, এই ক্যাপগুলোর প্রক্রিয়াটি অগোছালো।

বাংলায় সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং পাওয়া যাচ্ছে। হ্যাঁ, আমরা আমাদের প্লাটফর্ম বিস্তৃত করছি। এসবিএস সাউথ এশিয়ান, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য।

এসবিএস বাংলা টিউন করুন এসবিএস অন ডিমান্ডে সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায়। দক্ষিণ এশীয় অন্যান্য ভাষায় সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো সরাসরি শুনতেও অন ডিমান্ডে টিউন করুন।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুনএসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন .

আর, এসবিএস বাংলার এবং ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস।

Share