সাইক্লিং আমার জীবনের একটি বড়ো অংশ: ফরিদ ভূইয়াঁ

Farid Bhuiyan recently completed 276 km long 'Sea to Summit' ride

Farid Bhuiyan recently completed 276 km long 'Sea to Summit' ride Source: Farid Bhuiyan

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

সিডনির বাসিন্দা ফরিদ ভূইয়াঁ একজন সাইক্লিস্ট, সাইক্লিং নিয়ে তার আছে নানা এডভেঞ্চার আর সব রোমাঞ্চকর গল্প। সম্প্রতি তিনি সম্পন্ন করেছেন দীর্ঘ "সি টু সামিট" রাইডটি। এটি শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ অঞ্চলের সমুদ্র সৈকত মেরিম্বুলা শহর থেকে এবং শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট কোজিআস্কোতে।


ফরিদ ভূইয়াঁর করা 'সি টু সামিট' রাইডটির দূরত্ব ২৭৬ কিমি আর এলিভেশন ক্লাইম্ব হবে ভু প্রস্থ থেকে ৫,৫০০ মিটার অথবা ১৮,০০০ ফিট উচুতে। এই রাস্তার চলার পথে অধিকাংশ পথই অত্যন্ত দুর্গম মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে। 

এছাড়া ফরিদ ভূইয়াঁ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বাইসাইকেলে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সাইক্লিং ইভেন্ট 'এভারেস্টিং' সম্পন্ন করে 'হল অফ ফেইমে' স্থান করে নিয়েছেন। 'এভারেস্টিং' হচ্ছে মাউন্ট এভারেস্টের সমান অর্থাৎ ৮,৮৪৮ মিটার উঁচু পর্যন্ত দূরত্ব সাইকেল চালিয়ে যে কোন পর্বতে আরোহন।


হাইলাইটস

  • ফরিদ ভূইয়াঁ সম্পন্ন করেছেন ২৭৬ কিলোমিটারের দীর্ঘ "সি টু সামিট" রাইডটি। 
  • প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সাইক্লিং ইভেন্ট 'এভারেস্টিং' সম্পন্ন করে 'হল অফ ফেইমে' স্থান করে নিয়েছেন। 
  • সাইক্লিং করতে গিয়ে নিজ পরিবার, পুলিশ এবং সাধারণ জনতার সহযোগিতা পান।
পেশায় একজন একাউন্টেন্ট ফরিদ ভূইয়াঁ সাইক্লিং নিয়ে তার নানা অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন এসবিএস বাংলার সাথে। 

সাইক্লিং-এর সাথে জড়িয়ে পড়া 

অস্ট্রেলিয়া আসার পর শুরুতে গাড়ি ব্যবহার করলেও ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে ফেলার পর মিঃ ফরিদ ভূঁইয়া কাজে যেতেন সাইক্লিঙ করে, আর ধীরে ধীরে সৌখিন সাইক্লিং  রাইড, বিভিন্ন ইভেন্ট এবং ক্লাবে অংশ নিয়ে চিরদিনের মত জড়িয়ে পড়লেন সাইকেল চালনায়।
Farid Bhuiyan is the first Bangladeshi cyclist who completed 'Everesting'
Farid Bhuiyan is the first Bangladeshi cyclist who completed 'Everesting' Source: Farid Bhuiyan
যেসব ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছেন

মিঃ ফরিদ ভূঁইয়া বলেন, সৌখিন সাইক্লিস্ট হিসেবে বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় সবগুলো ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন তিনি। ক্যানবেরার ‘ফিটজ চ্যালেঞ্জ’, এডিলেইড, ভিক্টোরিয়ার মেলবোর্ন এবং পপুলার ইভেন্ট ‘এলপাইন ক্লাসিক’ যেটি মাউন্ট হথাম, মাউন্ট বাফেলো, ফলস ক্রিকসহ বড় বড় পাহাড় নিয়ে একটি রাইড হয়, সেগুলিতে অংশ নিয়েছেন তিনি। 

তিনি বলেন, "এইসব ইভেন্টে আমার এতো এতো স্মরণীয় ঘটনা আছে যে বলে শেষ করা যাবে না।" 

মিঃ ফরিদ ভূঁইয়া এমন সব জায়গায় সাইক্লিং করেছেন যেখানে গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করা যায় না।  

"ঐসব জায়গার দারুন সব প্রাকৃতিক দৃশ্য আমাকে ভীষণ মুগ্ধ করেছে। আমার সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা প্রথম বাঙালি হিসেবে ‘এভারেসটিং’ করা, যেটি করতে ১৬ ঘন্টা লেগেছিলো, শুরু করি রাত দুটোয় এবং শেষ করি রাত আটটায়।"
Farid Bhuiyan with fellow cyclists
Farid Bhuiyan with fellow cyclists Source: Farid Bhuiyan
ওই পুরো রাইডে সাধারণ মানুষ, এলাকাবাসীরা খুব সাহায্য করেছে।  

"আরেকটি স্মরণীয় ইভেন্ট 'সি টু সামিট', সেটি ছিল ২৭৬ কিলোমিটারের এবং অধিকাংশ পথ ছিল সব নেটওয়ার্কের বাইরে অত্যন্ত দুর্গম রাস্তায়।"  

দীর্ঘ যাত্রায় আগে থেকে পরিকল্পনা 

মিঃ ফরিদ ভূঁইয়া বলেন, "সাইক্লিং আমার জীবনের একটি বড় অংশ।"

কোনো দীর্ঘ দূরত্বের রাইডের জন্য আগে থেকে পরিকল্পনা করেন তিনি। যেখানে যাবে সেখানকার পরিস্থিতি কি, কোথায় রাত কাটানো যাবে, কোথায় থামা যাবে, আশেপাশে দোকান-পাট বা ক্যাফে আছে কিনা, জরুরী সাহায্যের জন্য কি করতে হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো আগে থেকেই গবেষণা করেন তিনি।  

তিনি বলেন, সম্প্রতি তিনি 'সি টু সামিট' রাইডটি করতে গিয়ে জনগণের সাহায্য ছাড়াও মাউন্ট কোজিয়াস্কোতে উঠতে গিয়ে পুলিশ তাকে পানি দিয়ে সাহায্য করেছে। শুধু তাই না, পুলিশ অনেক সময় পর্যন্ত তার নিরাপত্তাও দেখভাল করেছে।
Farid Bhuiyan with his wife
Farid Bhuiyan with his wife Source: Farid Bhuiyan
ব্যবহার করেন জিপিএস ট্র্যাকার 

মিঃ ফরিদ ভূঁইয়া বলেন, শুরুতে দূর দূরান্তে যেতে কিছুটা ভয় লাগতো, পরে ধীরে ধীরে তার আত্মবিশ্বাস তৈরী হয়।  তার পরিবারের সদস্যরা কিংবা ক্লাব মেম্বাররা যাতে তাকে খুঁজে পায় এজন্য তিনি ব্যবহার করেন জিপিএস ট্র্যাকার। 

পরিবার থেকে সহযোগিতা পান ফরিদ 

মিঃ ফরিদ ভূঁইয়া জানান, তার স্ত্রী, বাবা-মা এবং বোন তাকে সাইক্লিংয়ের জন্য সহযোগিতা করেন। যদিও বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়, তারা তার ইনজুরি নিয়ে চিন্তিত, কিন্তু যখন কোন ইভেন্ট সাফল্যের সাথে শেষ করেন তখন তারা অভিনন্দন জানান। 

তিনি তার স্ত্রীর সমর্থনের কথা উল্লেখ করে বলেন, অনেক সময় আশেপাশের রাইডে গেলে তাকে নিয়ে যান, স্থানীয় পার্কগুলোতে ঘুরেফিরে সময় কাটান।

মিঃ ফরিদ ভূঁইয়ার পুরো সাক্ষাতকারটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন

আরও দেখুনঃ



 

 


Share